যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু সরকারের পদক্ষেপ সমুহ আলোচনা কর।

যদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু সরকারের পদক্ষেপ সমুহ আলোচনা কর।(অনার্স পরিক্ষা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-২০১৯)
Describe the steps taken by the Bangabandhu Government to reconstruet the war ravaged country.

 দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু সরকারের পদক্ষেপ সমুহ
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জনগুলোর মধ্যে ছিল,
মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন,
১০ মাসের মধ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য একটি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল সংবিধান প্রণয়ন,
মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় সৈন্যদের দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানো,
নতুন প্রজাতন্ত্রের জন্য বিশ্বের ১৪৩টি দেশের স্বীকৃতি লাভ,
ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রিত এক কোটি শরণার্থী এবং
যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্য দ্বারা ধর্ষিত প্রায় তিন লক্ষ নারীর পুনর্বাসন
স্বাধীনতালাভের ১৫ মাসের মধ্যে নতুন সংবিধান অনুসারে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান ছিল আওয়ামীলীগের আরেকটি বিশাল অর্জন
১৯৭৩ সালের এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৩টি আসন লাভের মধ্য দিয়ে বিপুল বিজয় অর্জন করে
তার উল্লেখযোগ্য কিছু সাফল্যের সার সংক্ষেপ এখানে তুলে ধরছি-
) অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির পুরোধা পুরুষ ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৫৫ সালের ২১ অক্টোবর আওয়ামলী মুসলীম লীগ থেকে তিনি মুসলিম শব্দ বাদ দিয়ে অসাম্প্রদায়িকআওয়ামী লীগনামকরণ করেন
) বাঙালির মুক্তির সনদ দফার প্রণেতা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবজ্ঞা পুরুষ
) মুক্তিযুদ্ধের সফল রূপকার। তাঁর ৭ই মার্চের ভাষনই ছিলো গেরিলা যুদ্ধের কৌশল
) একটি দেশ স্বাধীন হবার মাত্র ৫০ দিনের মাথায় সে দেশ থেকে বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহার ছিলো একটি বিস্ময়কর ঘটনা। বঙ্গবন্ধুর প্রজ্ঞায় এবং দৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই ১৯৭২ এর ১২ মার্চ ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হয়
) বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার মাত্র এক বছরের মধ্যে জাতিকে একটি আধুনিক, গণতান্ত্রিক সংবিধান উপহার দেন। ১৯৭২ এর ১৬ ডিসেম্বর সংবিধান কার্যকর হয়
) ক্ষমতায় আসার মাত্র এক বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন
) বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে একটি গণমুখী শিক্ষানীতি প্রণয়নের উদ্যেগ নেন। এলক্ষ্যে ১৯৭২ সালের ২৬ জুলাই : মুহাম্মদ কুদরত--খুদাকে সভাপতি করে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। কমিশন ১৯৭৪ সালের মে মাসে পূর্ণাঙ্গ রির্পোট পেশ করে
) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে কৃষি ক্ষেত্রে নেয়া হয়েছিল ব্যাপক কর্মসূচী। এর মধ্যে ছিলো ৪০ হাজার শক্তি চালিত লো লিফট পাম্প ২৯০০টি গভীর নলকূপ ৩০০০ অগভীর নলকূপ। ১৯৭২ সালের মধ্যেই জরুরী ভিত্তিতে বিনামূল্যে ১৬,১২৫ টন ধান বীজ, ৪৫৪ টন পাট বীজ এবং ১০৩৭ টন গম বীজ সরবরাহ করা হয়। ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা চিরতরে রহিত করা হয়
) যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে শিল্প কারখানা রক্ষায় বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ২৬শে মার্চ জাতীয়করণ কর্মসূচী ঘোষণা করেন। এর ফলে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেমে শিল্প-কলকারখানা আবার চালু হয়। ব্যাংক, বীমা জাতীয়করনের ফলে গতি সঞ্চারিত হয়
১০) প্রথম বাজেটে জনগনের উপর কোন কর আরোপ করা হয়নি
১১) বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে পুনর্গঠন করেন। সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষনের জন্য বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেন
১২) বঙ্গবন্ধু সিভিল প্রশাসন পুনর্গঠন করেন
১৩) বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে প্রথম এক বছরেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত ২৮৭টি সেতুর মধ্যে ২৬২টি ২৭৪টি সড়ক সেতুর মধ্যে ১৭০টির মেরামত শেষ হয়। দশ কোটি টাকা ব্যয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পূণঃ নির্মাণ করা
পাকিস্তানি সৈন্যদের আত্মসমর্পণের পর তিন মাসের মধ্যে ৫৪টি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।
বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগে বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর ১৪৩টি দেশের স্বীকৃতি আদায় করেন। জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন, জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ এবং ওআইসির সদস্য লাভ করে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু প্রথম বাঙালি যিনি একটি দেশের সরকার প্রধান হিসেবে জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় ভাষণ দেন

No comments

Powered by Blogger.