ছয়-দফা কর্মসূচিকে কেন বাঙালির ম্যাগনাকার্টা বলা হয়?

ছয়-দফা কর্মসূচিকে কেন বাঙালির ম্যাগনাকার্টা বলা হয়(অনার্স পরিক্ষা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-২০১৯)
Why is the six-point demand called the Magnacarta of the Bangales?
হরহামেশাই শুনে থাকি বাঙালী জাতির মুক্তির সনদ বা ম্যাগনাকার্টা হচ্ছে ছয়দফা কিন্তু অনেকেই হয়তো জানি না ছয়দফা এবং ম্যাগনাকর্টার সাদৃশ্য কোথায় একটু লক্ষ করুন আজ থেকে ৮০১ বছর আগে, ১২১৫ সালের লন্ডনে এক নদীর পারে একটি ঘটনা ঘটেছিলো, যা ইংরেজি ভাষাভাষী অঞ্চলসহ বিশ্বের ঘটনা প্রবাহকে পাল্টে দিয়েছিলো রাজা নিজের খুশিমতো জোর করে নাগরিক সমাজের সম্পত্তি আত্মসাত্ বা করায়ত্ত করে নিতেন এরই বিরুদ্ধে নাগরিক সমাজ একত্রিত হন
নদীর পারে রানীমেড নামক স্থানে জড়ো হয়ে সমবেত নাগরিক স্থির করেন যে, রাজার ক্ষমতার রাশ টেনে ধরতে হবে। এর ফল হচ্ছে ম্যাগনাকার্টা। এটি ৬৩টি অনুচ্ছেদে বিভক্ত হাজার শব্দের এক সমৃদ্ধ দলিল। সত্যি বলতে, এই দলিলটি একটু পাঁচমিশালি। যেমন, টেমস নদীতে মাছ ধরার সব খাঁচা সরিয়ে নেয়া বা এককভাবে কোনো নারীর সাক্ষ্যের উপর ভিত্তি করে কোন পুরুষকে গ্রেফতার বা আটক করার বিপক্ষে মত দিয়েছে এই চার্টার। শতশত বছর ধরে ইংরেজ জাতি এবং বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রসমূহ এই মূলনীতি অনুসরণ ব্যাখ্যা করেছে এবং স্বাধীনতার ভিত্তি গড়ে উঠেছে। আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণা এবং বিল অব রাইট লেখা হয়েছে এর উপর ভিত্তি করে। সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাতেও প্রতিফলিত হয়েছে এর ধারণাসমূহ। এমনকি আজকের দিনের রাজনৈতিক নেতারাও সাধারণ মানুষের অধিকারের কথা বলতে গিয়ে রক্ষাকবচ হিসাবে উচ্চারণ করেন ম্যাগনা কার্টার কথা। সরকারের শাসনের রাশ টেনে ধরার ক্ষেত্রে একে প্রতীকী অর্থে ব্যবহার করা হয়
১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে ভারত পাকিস্তান স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হলেও স্বাধীন হয়নি তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশ ভারত পাকিস্তান বিভক্ত হলে পূর্বপাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের অন্তভূক্ত হয়ে থাকে বাঙালীদের উপর ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের বৈষম্য, শোষণ-নিপীড়ন, জোড়-জুলুম, অন্যায়-অত্যাচার শেষ হয়ে গেলে পশ্চিম পাকিস্তানিরা বাঙালীদের উপর চরম বৈষম্য, অন্যায়-অত্যাচার শুরু করে তারই ধারাবাহিকতায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবী, অর্থনীতিবিদ রাজনীতিবিদেরা এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠে এবং ১৯৬৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী আওয়ামীলীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় ছয়দফা দাবি আদায়ের লক্ষে কর্মসূচী গ্রহণ করা হয় পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালের ১৮ মার্চ আওয়ামীলীগের কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ মুজিবুর রহমানের নামেআমাদের বাঁচার দাবি: -দফা কর্মসূচিশীর্ষক একটি পুস্তিকা প্রচার করা হয় ক্রমান্বয়ে ছয় দফা দাবিকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতির স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন গড়ে উঠে আর তাই ছয় দফা দাবিকে বাঙালী জাতির মুক্তির সনদ বলা হয় এবং এটিকে ইংল্যান্ডেররাজা জনকতৃক স্বীকৃত ম্যাগনাকার্টার সাথে তুলনা করা হয় নিম্নে ছয় দফার দাবিগুলো তুলে ধরা হলোঃ
প্রথম দফাঃ শাসনতান্ত্রিক কাঠামো রাষ্ট্রের প্রকৃতি
১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে পাকিস্তান হবে যুক্তরাষ্ট্রীয় সংসদীয় পদ্ধতীর সরকার। আইন পরিষদ নির্বাচিত হবে জনগণের সরাসরি ভোটে এবং আইন পরিষদ সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী থাকবে
দ্বিতীয় দফাঃ কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা
কেন্দীয় সরকারের ক্ষমতা শুধু প্রতিরক্ষা বৈদেশিক নীতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে এবং বাকি সকল ক্ষমতা অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে বহাল থাকবে


তৃতীয় দফাঃ মুদ্রা অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতা
পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে যাতে মুদ্রা পাচার না হয় এজন্য পূর্ব পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সহজে বিনিময়যোগ্য দুটি পৃথক মুদ্রা ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং মুদ্রার পরিচালনা ক্ষমতা আঞ্চলিক সরকারের হাতে ন্যাস্ত থাকবে। অথবা এর বিকল্প হিসেবে একটি মুদ্রা ব্যবস্থা চালু থাকবে এই শর্তে যে, একটি কেন্দীয় রিজার্ভ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যার অধীনে দুই অঞ্চলে দুইটি রিজার্ভ ব্যাংক থাকবে এবং মূলধন পাচার বন্ধ করার জন্য কার্যকরী সাংবিধানিক ব্যবস্থা থাকতে হবে

চতুর্থ দফাঃ কর, রাজস্ব শুল্ক বিষয়ক ক্ষমতা
অঙ্গরাজ্যগুলির কর ধার্যের ব্যাপারে সার্বভৌম ক্ষমতা থাকবে। দুই অঞ্চলের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পৃথক হিসাব থাকবে এবং অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা রাজ্যের হাতে থাকবে। তবে প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের জন্য অঙ্গ-রাষ্ট্রীয় রাজস্বের একটি অংশ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাপ্য হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের অঙ্গরাজ্যগুলির করের শতকরা একই হারে আদায়কৃত অংশ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল গঠিত হবে

পঞ্চম দফাঃ বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা
০১। অঙ্গরাজ্যগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পৃথক হিসাব থাকবে
০২। অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা অঙ্গরাজ্যগুলির হাতে থাকবে
০৩। কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা সমান হারে অঙ্গরাজ্যগুলিই মিটাবে
০৪। রাজ্যগুলির মধ্যে দেশিয় পণ্য বিনিময়ে কোনো শুল্ক ধার্য করা হবে না
০৫। রাজ্যগুলোর হতে অন্যকোনো রাষ্ট্রের সাথে আন্তজার্তিক বাণিজ্য করার ক্ষমতা থাকবে
০৬। শাসনতন্ত্রের অন্তভূক্ত অঙ্গরাজ্যগুলো বিদেশে নিজ নিজ বাণিজ্যিক প্রতিনিধি প্রেরণ করতে পারবে
০৭। অঙ্গরাজ্যগুলোর নিজেদের প্রয়োজনে বানিজ্যিক চুক্তি সম্পাদন করতে পারবে

ষষ্ঠ দফাঃ আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠন সংক্রান্ত ক্ষমতা
আঞ্চলিক সংহতি প্রতিরক্ষার জন্য অঙ্গরাজ্যগুলিতে আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠন করার ক্ষমতা দিতে হবে। কেন্দ্রীয় নৌবাহিনীর সদর দপ্তর পূর্ব পাকিস্তানে তথা বর্তমান বাংলাদেশে স্থাপন করতে হবে এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে অস্ত্র কারখানা স্থাপন করতে হবে
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
ছয়-দফা কর্মসূচিকে কেন বাঙালির ম্যাগনাকার্টা বলা হয়? (অনার্স পরিক্ষা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-২০১৯)
Why is the six-point demand called the Magnacarta of the Bangales?

ঐতিহাসিক ছয় দফা বাঙালি জাতির 'ম্যাগনা কার্টা'
'৭০-এর নির্বাচনের পরে আসে 'জাতীয় পরিচিতি' 'স্বাধীন বাংলাদেশ' প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত পর্যায় '৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ। ৩০ লাখ বাঙালির আত্মদান, প্রায় লাখ বাঙালি মা-বোনের ইজ্জত এবং কয়েক হাজার ভারতীয় সেনার আত্মাহুতি সমগ্র বাংলাদেশকে একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করার মধ্য দিয়ে বিশ্বের রাজনৈতিক মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
প্রতি বছর জুন ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস হিসেবে পালিত হয়। এবারো হলো। ১৯৬৬ সালের দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা ছয় দফা দাবিতে হরতাল পালন করেছিল। জিন্নাহর 'দ্বিজাতিতত্ত্ব' থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন 'দুই অর্থনীতি'ভিত্তিক ছয় দফা কর্মসূচি। সাম্প্রদায়িক বিভেদভিত্তিক শাসন-শোষণের বেড়াজাল ছিন্ন করে, অর্থনীতির অসাম্প্রদায়িক চেতনাভিত্তিক স্বাধীন বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের পথে বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে ছয় দফা কর্মসূচিকে বাংলাদেশের 'ম্যাগনা কার্টা' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। শোষণের জন্য ধর্মীয় ভাবাবেগকে নির্লজ্জ নিষ্ঠুরভাবে ব্যবহারের লক্ষ্যে সৃষ্টি হয়েছিল পাকিস্তান। শোষণের যন্ত্রণায় দগ্ধ হচ্ছিল তৎকালীন সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানবাসী। ধর্মের নামে শোষণ ছিল সর্বব্যাপী। সমাজ, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি সবকিছুকে সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হচ্ছিল। প্রথমে ভাষা দিয়েই শুরু হয়েছিল। 'ধর্মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ'_ অজুহাতে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য ঘোষণা দিয়েছিলেন জিন্নাহ। বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে বাঙালিরা তার প্রতিবাদ করেছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের রক্তপিচ্ছিল পথ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সোপান গড়ে দিয়েছে। আর আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন শাসনতন্ত্রবাদের বাইরে বাঙালি রাজনীতির জন্য একটি জনপ্রিয় ভিত্তি তৈরি করেছিল। পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক 'বৈষম্যমূলকভাবে প্রণীত পরিকল্পনা' অভ্যন্তরীণ প্যাটার্নের মুখোশ উন্মোচন করছিল। '৫৪ সালে ভোটাররা যুক্তফ্রন্টকে সমর্থন করে তাদের স্বাধীন চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়, যা পূর্ববঙ্গে মুসলিম লীগকে ধ্বংস করে দেয় এবং আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের জন্য ২১ দফা দাবির বিজয় প্রত্যক্ষ করে। '৫৬ সালে পাকিস্তানের সংবিধান স্বায়ত্তশাসনের ধারণা পরিহার করে, তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়েছিল যে পূর্ব পাকিস্তানের ক্ষোভ যদি যথাযথভাবে বিবেচনা না করা হয়, বাঙালিদের জন্য পাকিস্তান অগ্রহণীয় হবে।
যুক্তরাষ্ট্রীয় পদ্ধতির একটি অপরিহার্য নীতি হচ্ছে জাতীয় সম্পদ আনুপাতিকভাবে বণ্টন করতে কেন্দ্রীয় সরকার সব সময় একটি আম্পায়ারের ভূমিকা পালন করে। ধরনের পদক্ষেপ শুধু উত্তেজনা হ্রাসের জন্যই সহায়ক নয়, বরং এটি জাতীয়তাবোধ প্রবিষ্ট করার মাধ্যমে জাতীয় সংহতি শক্তিশালী করে। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার যে ধরনের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার অনুশীলন করছিল তা জাতীয় সংহতির জন্য ক্ষতিকর ছিল। বাঙালিদের একটি সাধারণ ক্ষোভ ছিল তাদের অনুন্নয়নের জন্য দায়ী হচ্ছে তাদের বৈধ সম্পদ পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়নের জন্য শোষণ করা। '৬২ সালে আইয়ুব খানের চার বছরের সামরিক শাসনের পর একটি বাঙালি জাতীয় বিপ্লবের ধারণা বিকাশের লক্ষ্য নিয়ে 'বেঙ্গল লিবারেশন ফোর্স' নামে ছাত্রদের একটি শক্তিশালী গোষ্ঠী গঠিত হয়। এর মূলে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এভাবে '৬২ সালের মধ্যে স্বাধীনতার রূপকল্প প্রণীত হতে দেখা যায়।
'
পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তান আলাদাভাবে গড়ে ওঠার কারণে দুই অংশে দুটি আলাদা অর্থনীতি এবং দুটি আলাদা রাজনৈতিক সত্তা গড়ে উঠেছে' তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ধারণা বদ্ধমূল হতে দেখা যায়। বুদ্ধিজীবীরাই স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার জন্য একটি ব্যাপক বিস্তৃত প্রভাবশালী সার্কেল গড়ে তোলেন। '৬০-এর দিকে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অর্থনীতির বৈষম্যমূলক সম্পর্কের সঙ্গে ভাষা আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট বাঙালি সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের সমন্বয়ে পাকিস্তানের ভেতরে, পূর্ব পশ্চিম অংশের আলাদা দুই অর্থনীতি আলাদা দুই রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠার মধ্য দিয়ে, পাকিস্তানি জাতীয়তার বিপরীতে বাঙালি জাতীয়তার ব্যাখ্যাসংবলিত 'দ্বিজাতিতত্ত্ব' প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা ধর্মভিত্তিক 'দ্বিজাতিতত্ত্ব' থেকে ভিন্ন ধরনের ছিল। ১৯৫৮ থেকে '৬৬ সালের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানে গড়ে এক বছরে হাজার ৯৪৬টি রাজনৈতিক দাঙ্গা হয়েছিল, একই সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানে গড়ে এক বছরে হয়েছিল হাজার ৫৩টি দাঙ্গা।
ধরনের অভ্যন্তরীণ উত্তেজনাপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে '৬৫ সালে কাশ্মীরের বিবাদপূর্ণ এলাকা নিয়ে পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে একটি যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল। সময় সম্ভাব্য ভারতীয় আক্রমণের মুখে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিরক্ষার জন্য শুধু এক ডিভিশন পদাতিক এবং এক স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান ডেপ্লয় করা হয়েছিল। ১৭ দিনের জন্য পূর্ব পাকিস্তান বায়ু সমুদ্র উভয় পথে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। যদিও ভারত পূর্বাঞ্চলে একটি ফ্রন্ট খোলা থেকে বিরত ছিল, তবে সম্ভাব্য ভারতীয় হামলার ব্যাপারে বাঙালিরা শঙ্কিত ছিল। ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন এভাবে, '৬৫ সালের যুদ্ধ পাকিস্তানে একটি রাজনৈতিক সংকটের জন্ম দিয়েছিল, যা প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছিল। সময় বঙ্গবন্ধুর উক্তি জানা যায় অধ্যাপক তালুকদার মনিরুজ্জামানের 'ন্যাশনাল ইন্টিগরেশন অ্যান্ড পলিটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট ইন পাকিস্তান' শীর্ষক গবেষণা নিবন্ধ থেকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, 'যুদ্ধের পরে স্বায়ত্তশাসনের প্রশ্নটি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এভাবে পূর্ব পাকিস্তানকে সব দিক দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলার সময় উপস্থিত হয়।'
পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান '৬৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছয় দফা কর্মসূচি তুলে ধরেন। ছয় দফা দাবির ইতিহাস হচ্ছে পাকিস্তানি ধর্মীয় ঔপনিবেশিক শাসন থেকে বেরিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সমাপনী পর্বের সূচনা। '৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মিলিত বিরোধী দলের এক কনভেনশনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। তবে কনভেনশনের সভাপতি চৌধুরি মোহাম্মদ আলী ছয় দফা নিয়ে সেখানে বিস্তারিত আলোচনা করতে দেননি। স্মরণ করা যেতে পারে, '৬৫ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতে পশ্চিম ফ্রন্টে সংঘটিত ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিরোধী দলের সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যুদ্ধটি যদিও অচলাবস্থার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছিল তথাপি ভারতীয় বাহিনীর কাছে পাকিস্তান তার ভূখ-ের বড় একটি মূল্যবান অংশ হারিয়েছিল। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের উদ্যোগ এবং পরে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মধ্যে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তাশখন্দে '৬৬ সালের ১০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বৈঠকের মধ্য দিয়ে এটি মীমাংসিত হয়। এখানে দুই বিবদমান প্রতিবেশী সম্মত হয় যে উভয় দেশ তাদের দখলিকৃত ভূখ- থেকে সৈন্য অপসারণ করবে এবং ভবিষ্যতে সকল প্রকার সমস্যা দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনা এবং কূটনৈতিক দেনদরবারের মাধ্যমে সমাধান করবে।
বিরোধী দলগুলোর দাবি লাহোর কনভেনশনে উত্থাপিত হলেও সেখানে ছয় দফা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে না দেয়ার কারণে বঙ্গবন্ধু ১১ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরে এসে ঢাকা বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলন করে ছয় দফা সম্পর্কে বিস্তারিত জনসম্মুখে তুলে ধরেন। এরপর ২০ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় ছয় দফা দলীয় কর্মসূচি হিসেবে গৃহীত হয়। ছয় দফা প্রচার প্রকাশের জন্য বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছয় সদস্যবিশিষ্ট উপকমিটি গঠন করা হয়। '৬৬ সালের ১৮ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে হাজার ৪৪৩ জন কাউন্সিলর বঙ্গবন্ধুকে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি, তাজউদ্দীন আহমদকে সাধারণ সম্পাদক এবং মিজানুর রহমান চৌধুরীকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত করেন। ছয় দফা কর্মসূচিভিত্তিক আন্দোলনের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর একান্ত ঘনিষ্ঠ অনুসারী, বর্তমান সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, "ছয় দফা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু বলতেন, 'সাঁকো দিলাম, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতায় উন্নীত হওয়ার জন্য' বস্তুত ছয় দফা ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজমন্ত্র তথা অঙ্কুর।"
ছয় দফা দাবি কালক্রমে ব্যাপক বিস্তৃত আন্দোলন এবং পরবর্তীকালে একটি সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার দিকে এগিয়ে নিয়েছিল। ছয় দফা কর্মসূচি প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে ছয় দফার ভিত্তিতে দলীয় গঠনতন্ত্র এবং নেতৃত্ব নির্বাচনে যে পরিবর্তন সাধিত হয়, তা পরবর্তীকালে ছয় দফার চূড়ান্ত পরিণতি এক দফা তথা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিত বহন করে।
ছয় দফা পরিকল্পনাটি বঙ্গবন্ধুকে এবং আওয়ামী লীগের বেশ কিছুসংখ্যক বাঙালি নেতা-কর্মীকে নবাবজাদা নসরুল্লাহ খানের নেতৃত্বাধীন নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সঙ্গে একটি মুখোমুখি সংঘাতমূলক পথে নিয়ে যায়। এটি তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের প্রচ- ক্রোধের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পাকিস্তানের এই লৌহশাসক প্রকাশ্যে ছয় দফার প্রবক্তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রের ভাষায় কথা বলার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আইয়ুবশাহি এবং তার সহযোগীরা মনে করতেন যে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা কর্মসূচি পাকিস্তানকে ভেঙে এর পূর্ব অংশকে দেশের অবশিষ্ট অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ '৬৬ সালে যে ছয় দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করেছিল তা ছিল নিম্নরূপ_
এক নাম্বার দফায় বলা হয়েছিল : লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা; সংসদীয় পদ্ধতির সরকার; সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন।
দুই নাম্বার দফায় যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারে দুটি বিষয় ন্যস্ত থাকার কথা বলা হয়েছিল, প্রতিরক্ষা পররাষ্ট্র; অন্য সব বিষয় ইউনিটগুলোর হাতে ন্যস্ত থাকবে।
তিন নাম্বার দফায় মুদ্রানীতির কথা বলা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, দুটি পৃথক অথচ সহজে বিনিময়যোগ্য মুদ্রা দুই অঞ্চলে প্রবর্তন, অথবা একক মুদ্রা। কিন্তু সে ক্ষেত্রে পূর্ব থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে মূলধন পাচার বন্ধে সাংবিধানিক বিধান রাখতে হবে। পৃথক ব্যাংকিং রিজার্ভ রাখতে হবে এবং পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পৃথক রাজস্ব মুদ্রানীতি গ্রহণ করতে হবে।
চার নাম্বার দফায় যুক্তরাষ্ট্রে ইউনিটগুলোর হাতে করারোপ রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষমতা ন্যস্ত থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কেন্দ্রের হাতে রকম কোনো ক্ষমতা থাকবে না। তবে কেন্দ্র তার নিজ ব্যয় বা চাহিদা মেটানোর জন্য প্রদেশগুলোর করের একটা অংশ পাবে।
পাঁচ নাম্বার দফায় দেশের দুই অঞ্চলের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের জন্য দুটি পৃথক বৈদেশিক বিনিময় মুদ্রার হিসাব রাখা; দেশের অর্জিত বৈদেশিক বিনিময় মুদ্রা দেশের সরকারের নিয়ন্ত্রণে এবং পশ্চিম পাকিস্তানের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা পশ্চিম পাকিস্তানের সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে; কেন্দ্রীয় সরকারের বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন দুই অঞ্চল কর্তৃক সমান হারে অথবা নির্ধারণযোগ্য অনুপাতে দুই অঞ্চল কর্তৃক মেটানো হবে; দেশজ পণ্য দেশের দুই অঞ্চলের মধ্যে শুল্কমুক্তভাবে অবাধে চলাচল করবে; সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিটের সরকারগুলো বিদেশে বাণিজ্য মিশন খোলা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপন করবে।
ছয় নাম্বার দফায় পূর্ব পাকিস্তানের জন্য একটি সামরিক বা আধাসামরিক বাহিনী গঠনের কথা বলা হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ঘোষিত ছয় দফা অতি দ্রুত বাঙালিদের মুক্তির সনদ হিসেবে (পূর্ব) বাঙালি জনগণের প্রাণের দাবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
'
৬৬ সালের মার্চ মে মাসে বঙ্গবন্ধু এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম মনসুর আলী এবং আরো অনেকে ছয় দফার পক্ষে জনসমর্থন সৃষ্টির লক্ষ্যে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান সফর করেছেন। পূর্ব পাকিস্তানব্যাপী ছয় দফার পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন দেখে আইয়ুবের তোষামোদে এক অনুগত গভর্নর আবদুল মোনায়েম খান আওয়ামী লীগ নেতাদের কারান্তরীণ করার হুমকি প্রদান করেন। ওই বছরের মে পাকিস্তান প্রতিরক্ষা আইনের আওতায় বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়। বঙ্গবন্ধুর অধিকাংশ সহযোগীকেও কারান্তরীণ করা হয়েছিল। সময় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মিজানুর রহমান চৌধুরী আওয়ামী লীগ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। মিজানুর রহমান চৌধুরী ছিলেন তখন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ (ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি অব পাকিস্তানের) সদস্য। সংগ্রামার্থে সজ্জিত আওয়ামী লীগ ছয় দফার পক্ষে সমর্থন সংগঠিত করা এবং বন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে '৬৬ সালের জুন সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল আহ্বান করে।
মিজানুর রহমান চৌধুরী সময় খুব দৃশ্যমান এবং প্রসিদ্ধ ভূমিকা পালন করেন, মনোবল ভেঙে পড়া একটি দলকে উজ্জীবিত করে তিনি হরতালের জন্য প্রস্তুত করান। একই সঙ্গে তিনি এবং অধ্যাপক ইউসুফ আলীসহ আওয়ামী লীগের এমএনএরা আওয়ামী লীগের ওপর সরকারি নিপীড়নের কথা আইনসভায় উত্থাপন করেন। আর এভাবে ছয় দফাকে সমগ্র (পূর্ব) বাঙালিদের দাবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল। অন্যদিকে পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরাচারী সরকার পূর্ব পশ্চিম পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলোর ওপর হরতালের খবর না ছাপানোর আদেশ দেয়। গণমাধ্যমের ওপর সেন্সরশিপ সত্ত্বেও পূর্ব পাকিস্তানব্যাপী হরতাল পালিত হয়। হরতাল পালনকারীদের ওপর পুলিশ ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের গুলিবর্ষণের ফলে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, টঙ্গী এবং দেশের অন্যান্য স্থানে আন্দোলনরত দশজন শহীদ হন। পরদিন জুন সংবাদপত্রগুলোয় আগের দিনের ঘটনা সম্পর্কে সরকারি ভাষ্যই কেবল প্রকাশিত হয়েছিল। সরকারি ভাষ্যে রাজপথে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সহিংসতার কথাই ফুটে উঠেছিল।
এভাবে ইতিহাস পুনঃসংজ্ঞায়িত করার কাজ শুরু হয়। (পূর্ব) বাঙালি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের দাবিসংবলিত বাংলাদেশের 'ম্যাগনা কার্টা' হিসেবে ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলনের ফলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে 'জাতীয় চেতনা' সুদৃঢ় ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়। তাদের যৌথ মানসিকতায় নিশ্চিত এবং দ্রুততার সঙ্গে জাতীয়তাবাদের চেতনায় বাঙালিরা নিজেদের পুনরায় আবিষ্কার করে। ছয় দফা আন্দোলনের পথ ধরে এরপরে আসে '৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং '৭০-এর নির্বাচন। '৭০-এর নির্বাচনের মাধ্যমে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগের প্রতি দেশের জনগণ তাদের সমর্থন ব্যক্ত বরে। পাকিস্তানি ধর্মীয় ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতীয় পরিচিতি উদ্ভব এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ছয় দফা অন্যতম একটি মাইলফলক।
'
৭০-এর নির্বাচনের পরে আসে 'জাতীয় পরিচিতি' 'স্বাধীন বাংলাদেশ' প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত পর্যায় '৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ। ৩০ লাখ বাঙালির আত্মদান, প্রায় লাখ বাঙালি মা-বোনের ইজ্জত এবং কয়েক হাজার ভারতীয় সেনার আত্মাহুতি সমগ্র বাংলাদেশকে একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করার মধ্য দিয়ে বিশ্বের রাজনৈতিক মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে
অধ্যাপক . অরুণ কুমার গোস্বামী: চেয়ারম্যান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ এবং পরিচালক, সাউথ এশিয়ান স্টাডি সার্কেল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়


No comments

Powered by Blogger.