মানুষকে কেন আশরাফুল মাখলুকাত বলা হয়? (অনার্স পরিক্ষা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-২০১৯)

Why is man called ‘ashraful makhalukat’?
 আল্লাহপাক বলেছেন, মানুষকে আমি শ্রেষ্ঠ মাখলুক হিসেবে তৈরি করেছি এ জন্য যে, সে ভালো আর মন্দ বিবেচনা করতে পারে। কোন্ কাজটা তার জন্য কল্যাণের তা অনুধাবনের জ্ঞান তার আছে। কোনো মানুষ যদি এমন হয় যে, তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ মাখলুক হওয়ার গুণ নেই, পশুর মতো নির্বোধ, তাহলে পশুর ওপর তার কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। এদের ব্যাপারে কোরআন শরিফের মধ্যে এসেছে, 'তাদের অন্তর আছে, তা দ্বারা কিছুই বোঝে না এবং তাদের চোখ আছে, তা দ্বারা কিছুই দেখে না এবং তাদের কান আছে তা দ্বারা কিছুই শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মতো বরং তারা সেগুলোর চেয়েও অধিক বিপথগামী। তারাই পরিপূর্ণ গাফেল।' পশু; সে তো সৃষ্টিগতভাবেই নির্বোধ। সে বোঝে না যে, তার আসল কল্যাণ কোথায়? কার সঙ্গে সম্পর্ক করলে, কার আনুগত্য করলে দুনিয়ায় তার লাভ হবে এ জ্ঞান তার নেই। আর আখেরাত তো তার নাই-ই। কারণ মৃত্যুর পর তার আত্দা তার আগের জায়গায় চলে যায় আর পশুর দেহকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়।
আল্লাহপাক বলেন, যে মানুষ তার লক্ষ্যবস্তু বোঝে না, তার সৃষ্টি রহস্য উদ্ঘাটন করতে চিন্তাভাবনা করে না, সে কোত্থেকে এসেছে, কেন এসেছে, কোথায় যাবে, তার পরিণাম কী হবে- এসব যে বোঝে না, সে দেখতে মানুষ হলেও মূলত পশুর মতো, এমনকি পশুর চেয়েও অধম। আল্লাহ প্রথমেই বলতে পারতেন, এরা পশুর চেয়েও অধম। কিন্তু এরূপ না বলে তিনি উপরোক্ত দুটি শব্দ ব্যবহার করেছেন। এর একটি কারণ হলো- পশুর চেয়ে অধম কোনো জাতি আল্লাহ পৃথিবীতে সৃষ্টি করেননি। যেমন আমরা উপমা দেই যে, এই লোকটা বাঘের মতো। বাঘ তো কল্পনা করা যায়। আরও বলি, এই লোকটা সাপের মতো দংশন করে মানুষকে। অর্থাৎ সাপ যেমন ভয়াবহ, এই মানুষটা তেমন ভয়াবহ। আরও বলি, সে পশুর মতো, কুকুরের মতো। কুকুরের অস্তিত্ব আছে। কিন্তু পশুর চেয়ে নিম্নস্তরের জিনিস বাস্তবে পাওয়া যায় না। তাই পশুর চেয়ে নিম্ন কোনো উদাহরণ পেশ করা সম্ভব নয়। কিন্তু কোরআনে বলা হচ্ছে, পশুর চেয়েও অধম ওই লোকটা যে তার সৃষ্টির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বোঝে না। আল্লাহ আমাদের আশরাফুল মাখলুকাতের মর্যাদা রক্ষার তওফিক দান করুন।

No comments

Powered by Blogger.