দ্বিতয়ী যোগাযোগের বৈশিষ্ট্য । Characteristics of Dyadic Communication
দ্বিতয়ী যোগাযোগের বৈশিষ্ট্য
Characteristics of Dyadic Communication
দ্বিতয়ী যোগাযোগ বা Dyadic communication হল আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগের একটি বিশেষ পর্যায় যেখানে অংশগ্রহনকারী ২জন ব্যক্তি মুখোমুখি অবস্হানে পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়ায় লিপ্ত হয়। এতে অংশগ্রহনকারীরা একে অন্যকে প্রভাবিত করে এবং একই সাথে বার্তা প্রেরণ করে।
নিচে দ্বিতয়ী যোগাযোগের
বৈশিষ্ট্যসমূহ বর্ণনা
করা
হল
:
১। মানুষের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় দ্বিতয়ী যোগাযোগে। William W Wilmot এর মতে ~ Of all possible combination of
people dyadic relationship are the most intimate.
একমাত্র দ্বিতয়ী যোগাযোগের প্রেক্ষাপটে যোগাযোগকারী একে অন্যের সাথে সহজে আলাপ-আলোচনা করতে পারে। Dyadic context ছাড়া এমন আলাপ- আলোচনা করা যায় না।
২। Each Dyad is unique. অর্থাৎ প্রত্যেকটি দ্বিতয়ী সম্পর্ক একক ও স্বতন্ত্র। একটির সাথে অন্যটির তুলনা করা যায় না। A ও B দুজন মিলে Dyad হলে A ও B এর একজনকে হারানো মানে Dyad ভেঙ্গে যাওয়া
৩।সব যোগাযোগের মূল হচ্ছে দ্বিতয়ীযোগাযোগ । দ্বিতয়ী যোগাযোগ সবচেয়ে বেশি প্রচলিত।
৪। দ্বিতয়ী যোগাযোগের সদস্য সংখ্যা ২জন। দ্বিতয়ের একজনকে হারানো মানে সবকিছুই হারানো। একজন চাই কিন্তু আরেকজন চান না তাহলে দ্বিতয়ী যোগাযোগ হবে না।
৫। দ্বিতয়ী যোগাযোগের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটা অনানুষ্ঠানিক (Informal)। ফলে মানুষের স্বকীয় দিকগুলো প্রকাশ পায়।
৬। দ্বিতয়ী যোগাযোগের মাধ্যমে খুব সহজেই কোন সমস্যার সমাধান করা যায় । এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়।
৭। দ্বিতয়ী যোগাযোগে অংশগ্রহণকারীকে অবশ্যই স্বয়ং উপস্হিত থাকতে হবে এবং সক্রিয় অংশগ্রহন করতে হবে। কারণ মুখোমুখি যোগাযোগ ছাড়া ও দুজন ব্যক্তির মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হতে পারে। যেমন: দুজন ব্যক্তি মোবাইল ফোনে কথা বললে তবে তা দ্বিতয়ী যোগাযোগ হবে না ।
৮। দ্বিতয়ী যোগাযোগ বাচনিক ও অবাচনিক দুটোই হতে পারে।
৯। দ্বিতয়ী যোগাযোগের অন্যতম একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এ যোগাযোগে পরিণাম বা পরিণতি থাকে, এ যোগাযোগ আমাকে আনন্দ দিতে পারে, পূর্নতা দিতে পারে।
আবার দ্বিতয়ী যোগাযোগ আমাকে ধ্বংস করে দিতে পারে, আবার আমাকে নিঃসঙ্গতা এবং একাকীত্ব দিতে পারে।
১০। দ্বিতয়ীযোগাযোগ হচ্ছে আদান-প্রদান বা বিনিময়মূলক। এখানে প্রত্যেক যোগাযোগকারী যোগাযোগসূত্র তৈরি করে এবং ব্যাখা করে। এখানে প্রত্যেক যোগাযোগ কারী পারস্পরিকভাবে প্রভাবিত হয় এবং প্রভাবিত করে।
১১। দ্বিতয়ী যোগাযোগে আমরা নেতিবাচক শুনতে চাই না। তার মানে আবার এই না যে আমি সবসময় ইতিবাচক কথা বলব।
দ্বিতয়ী যোগাযোগে আমরা নেতিবাচক শুনতে চাই না। তার মানে আবার এই না যে আমি সবসময় ইতিবাচক কথা বলব। ইতিবাচক ও নেতিবাচক কথার মধ্যে তাই একটা ভারসাম্য রাখতে হবে।
১২। দ্বিতয়ী যোগাযোগে Noise কম থাকে।
১৩। দ্বিতয়ী যোগাযোগে আমরা সবচেয়ে বেশি গোপনীয়তা বা Hidden অংশ Share করি। তাই যখন আমি কোন Hidden অংশ শেয়ার করব আমাকে ভাবতে হবে আমি কতটুকু উন্মুক্ত করব। কারণ গোপন বিষয় জানার পর সে সুযোগ ও নিতে পারে। তাই গোপন বিষয় উন্মুক্ত করার সময় আমাকে ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে যোগাযোগকারী নিজ সম্পর্কে সচেতন হবে।
১৪। দ্বিতয়ী যোগাযোগ সামাজিক মিথষ্ক্রিয়ার প্রাথমিক স্তর। দ্বিতয়ী যোগাযোগ হচ্ছে প্রাথমিক এবং মানবিক সম্পর্ক গড়ে উঠার প্রথম স্তর। শিশু দুই -পাঁচ বছরের মধ্যে দ্বিতয়ী যোগাযোগ করতে পারে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আরও বহুমুখী সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। তবে তা দ্বিতয়ী যোগাযোগের ভিত্তিতেই গড়ে তোলে।
১৫। অন্যান্য যোগাযোগের তুলনায় দ্বিতয়ী যোগাযোগে খুব দ্রুত ফলাবর্তন (Feedback) পাওয়া যায়।
সুতরাং বলা যায় দ্বিতয়ী যোগাযোগ পরিস্হিতিতে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর ব্যক্তিগত দিকগুলো সবচেয়ে বেশি প্রকাশিত হয়, উপস্হাপিত হয়। অন্যান্য যোগাযোগের তুলনায় দ্বিতয়ী যোগাযোগ প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে অধিক জড়িত থাকা, অধিক তৃপ্ত থাকা এবং অধিক অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়।
No comments