আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য
আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ
এর
সংজ্ঞা
ও
বৈশিষ্ট্য
Interpersonal
communication definition and nature of interpersonal communication
Interpersonal communication বা আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ, যোগাযোগের একটি মৌলিক ধারা। সাধারণভাবে বলতে গেলে আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ হল দুইজন ব্যক্তি বা একটি ছোট দলের সদস্যদের (যারা পরষ্পরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত) মধ্যকার যোগাযোগ।
মূলত আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ এর ক্ষেত্রে যোগাযোগে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে দুইজন ব্যক্তির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা জরুরি। যেমন – বন্ধু, ভালোবাসার মানুষ, পরিবারের সদস্য,সহকর্মীদের মধ্যকার যোগাযোগকে আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। এসকল সম্পর্কে লিপ্ত ব্যক্তিগণ পরষ্পরের উপর নির্ভরশীল। এক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির কাজ অন্যজনের উপর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। অর্থাৎ এরা পরষ্পরের দ্বারা প্রভাবিত হয়।
যোগাযোগবিদ Joseph A. DeVito -র মতে,
“Interpersonal
communication is the verbal and nonverbal interaction between two(or sometimes
more than two) interdependent people.”
যোগাযোগবিদ Julia T. Wood বলেন,
“Interpersonal
Communication is the distinct type of interaction between people. “
অতএব, আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ আলোচনার ক্ষেত্রে যোগাযোগে লিপ্ত ব্যক্তির সংখ্যা, যোগাযোগের পরিবেশ এসব কিছুর চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ হল ব্যক্তিগণের মধ্যকার সম্পর্ক।
আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ
আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগের
বৈশিষ্ট্য
Nature of interpersonal
communication
1.I
nterpersonal communication involves interdependent individuals
আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্কে লিপ্ত ব্যাক্তিগণ পরষ্পর নির্ভরশীল হয়ে থাকেন। অর্থাৎ এদের একজনের আচরণ অন্যজনের উপর প্রভাব বিস্তার করে। সেই অর্থে ঘনিষ্ঠ বন্ধু, বাবা – ছেলে, মালিক – কর্মচারী এদের মধ্যকার সম্পর্ক আন্তঃব্যক্তিক।
এদিক থেকে বিবেচনা করলে আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগকে অনেকটা দ্বিতয়ী যোগাযোগ মনে হলেও আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ অনেকসময় ছোট দলের মধ্যেও হতে পারে যদি দলের সদস্যবৃন্দ পরষ্পর ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত হয়।
যেমনঃ পরিবার।
পরিবারে একজন সদস্যের আচরণ বা কার্যকলাপ অন্য সদস্যদেরও প্রভাবিত করে।অতএব পরিবারের সদস্যদের মধ্যকার যোগাযোগ আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ।
2.Interpersonal
communication is inherently relational
আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ একটি সম্পর্কে লিপ্ত ব্যাক্তিগণের মধ্যে হয়ে থাকে। এই সম্পর্কের অংশ হিসেবে আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ ঘটে থাকে।এক্ষেত্রে সম্পর্কভেদে যোগাযোগের মাত্রা বিভিন্ন হতে পারে।
যেমন: দু’জন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মধ্যে যোগাযোগ, ছাত্র-শিক্ষক যোগাযোগ এর চেয়ে ভিন্নতর হবে। মালিক কর্মচারীর মধ্যকার যোগাযোগ ভাইবোনের মধ্যে যোগাযোগের মতো হবে না। আবার এ যোগাযোগের ধরণের উপরেও সম্পর্কের ধরণ নির্ভর করে। যেমন :কারো সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে।
3.Interpersonal
communication exist on a continuum
আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এটি ক্রমশ impersonal থেকে interpersonal এর দিকে যায়। বিষয়টি নিম্নে আলোচনা করা হল:
Role
vs personal information
impersonal পর্যায়ে দুইজন যোগাযোগকারী তাদের ভূমিকা অনুযায়ী আচরণ করে। যেমন : একজন ডাক্তার রোগীর সাথে তার পেশা সুলভ আচরণ করে ড়লে। একইভাবে বিষয়টি রোগীর ক্ষেত্রেও তাই। এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে পরষ্পরকে আলাদা ব্যক্তিত্ব হিসেবে চিন্হিত করার প্রবণতা থাকে না। অথচ দুইজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু তাদের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে পরষ্পরের ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী আচরণ করে।
Societal
vs Personal rules
সাধারণত impersonal পর্যায়ের যোগাযোগকারীরা সমাজে প্রচলিত রীতিনীতি অনুযায়ী আচরণ করে। আর interpersonal পর্যায়ে যোগাযোগে অংশগ্রহণকারী ব্যাক্তিগণ নিজস্ব নিয়ম ও পছন্দমতো আচরণ করে।
Social
vs personal message
Impersonal পর্যায়ের সম্পর্কে যোগাযোগে বিনিময়কৃত বার্তা সামাজিক যোগাযোগ এর পর্যায়ে পড়ে।এর সাথে ব্যক্তিগত জীবন বা আবেগের সংযোগ খুব কমই থাকে। Interpersonal পর্যায়ে বিনিময় কৃত বার্তা ব্যক্তির সাথে সম্পর্কিত এবং আবেগজড়িত হয়ে থাকে।
4.Interpersonal
communication involves verbal and nonverbal messages
আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগে বাচনিক এবং অবাচনিক উভয় প্রকার বার্তা আদান-প্রদান হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ব্যক্তি তার সকল ইন্দ্রিয়ের দ্বারা বার্তা গ্রহণ করে থাকে।
1.Interpersonal
communication take place in varied forms
বিভিন্ন উপায়ে আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ হতে পারে। যেমন : মুখোমুখি দু’জন ব্যক্তির মধ্যে হতে পারে,কম্পিউটার ব্যবস্থার আওতায় হতে পারে, কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক, টুইটার, ম্যাসেঞ্জার বা ইমেইল দ্বারাও যোগাযোগ হতে পারে। তবে এ যোগাযোগ আবার দুই ধরনের হয়।
Synchronous
এ ধরনের যোগাযোগ যুগপৎ ঘটে থাকে। ক্রমাগত মেসেজ আদান প্রদানের মাধ্যমে যোগাযোগ হয়।
Asynchronous
বার্তা প্রদান এবং গ্রহণ একই সময়ে হয় না। যেমন : একজন মেইল পাঠালে অন্যজন সেটি পরেরদিন দেখে তখনও জবাব দিতে পারে। এক্ষেত্রে যোগাযোগ যুগপৎ হয় না।
6.Interpersonal
communication involves choices
আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগে বিনিময়কৃত বার্তা ব্যক্তির পছন্দ অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। ব্যক্তি কোন তথ্য সকলের সাথে বিনিময় করবেন তা তার নিজস্ব পছন্দ। সবসময় আমরা যা চিন্তা করি তার সবটুকু আমরা প্রকাশ করি না। আমরা নিজেরাই নির্ধারণ করি কতটুকু প্রকাশযোগ্য। আবার এক এক ব্যক্তির সামনে এ তথ্য প্রকাশের মাত্রাও ভিন্ন হয়ে থাকে।
মোটাদাগে আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ প্রক্রিয়ার এসকল বৈশিষ্ট্য চিন্হিত করা যায়। প্রতিনিয়ত আমরা যে যোগাযোগের সমুদ্রে ডুবে থাকে আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ তার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে। তাই এর প্রক্রিয়া ও ধরণ সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে আমরা দক্ষতার সাথে যোগাযোগে অংশগ্রহণ করতে পারব।
No comments