বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নারী সমাজের অবদান মুল্যায়ন কর?

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নারী সমাজের অবদান মুল্যায়ন কর(অনার্স পরিক্ষা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-২০১৯)
Evaluate the contribution of women in the Liberation war of Bangladesh.
১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবাইই সর্বাত্মক এই যুদ্ধে শামিল হয়েছিল। আমাদের দেশীয় আলোচনায় বেশীরভাগ সময়ই এই মহান মুক্তিযোদ্ধা নারীদের নাম উঠে আসে না কিংবা তাদের কৃতিত্ব বা অবধানের কথা প্রকাশ করা হয়না। কিন্তু যে সব মহান ও দেশপ্রেমিক মহান নারীরা তাদের জীবন বিপন্ন করে দেশকে ভালোবেসে পুরুষের পাশাপাশি নিজের জীবনকে বিপন্ন করে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলো তাদের অবদানের কথা বাংলাদেশের ইতিহাস কখনো ভূলে যাবে না।
স্বাধীনতা যুদ্ধে অস্ত্র হাতে যুদ্ধক্ষেত্রে ফাকিস্তানীদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন অনেক নারী। কাঁকন বিবি, তারামন বিবি, শিরিন বানু মিতিল, আশালতা, রওশন আরার মতো অনেক নারী সরাসরি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, ফাকিস্তানী হানাদারদের গুলি করে মেরেছেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গোবরা ক্যাম্পে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছেন অনেক নারী। ভারতে শরনার্থী শিবিরে ডাক্তার, নার্স এবং স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অসংখ্য নারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শরনার্থীদের সেবা করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী হিসেবে অংশ নিয়েছেন অনেক নারী শিল্পী। এরা ছিলেন যুদ্ধের প্রেরণা। আবার দেশের অভ্যন্তরে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী, শান্তিকমিটি, রাজাকারবাহিনীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে এদেশের গ্রামে, গঞ্জে ,শহরে, বন্দরে অসংখ্য নারী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছেন। যুগিয়েছেন খাদ্য, অস্ত্র বহন করেছেন, লুকিয়ে রেখেছেন, গোপন সংবাদ আনা নেয়া করেছেন। অথচ এই নারীরা তাদের অবদানের স্বীকৃতি ভালোভাবে পাননি আজও। ফাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদরের হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এদেশের প্রায় তিন লাখ নারী। তারা ধর্ষিত হয়েছেন, নৃশংস নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকেই শহীদ হয়েছেন, অনেকে মৃত্যুর অধিক যন্ত্রনা সহ্য করেও প্রাণে বেঁচে গেছেন। এরা নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েও নৈতিকভাবে পরাজিত হননি। এরা আপোষ করেননি ফাকিস্তানীদের সাথে। মরনের মুখোমুখি দাঁড়িয়েও এরা তাদের স্বামী, পুত্র, ভাইকে ধরিয়ে দেয়নি শত্রুর হাতে। অথচ যুদ্ধের পর এই বীরনারীরা তাঁদের প্রাপ্য স্বীকৃতি ও মর্যাদা এখনো পাননি বরং তাদের করা হয়েছে সমাজচ্যূত। যেন ধর্ষিত আর নির্যাতিত হওয়াটা তাদেরই 'অপরাধ' ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করার জন্য ভাগীরথীকে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করেছিল পাকিস্তানী সৈন্যরা। অথচ শহীদ ভাগরথী স্বাধীন দেশে পাননি তাঁর প্রাপ্য স্বীকৃতি। প্রয়াত ড. নীলিমা ইব্রাহিমের 'আমি বীরাঙ্গনা বলছি' বইয়ের পাতায় রয়েছে এই বীরনারীদের সংগ্রামের ইতিবৃত্ত।
তাদের প্রাপ্য সন্মানটুকু পায়নি। আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। কিন্তু ইতিহাস থেকে যা জেনেছি তাতেই ওই সময়ের সাহসী নারীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধায় মাথা নিচু হয়ে আসে। ইতিহাস আস্তে আস্তে বিকৃত হয়ে যায় সময়ের আর কালো ক্ষমতার প্রভাবে। তাই ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের দেশের নারীদের অবদান গুলো যদি সঠিক ভাবে তুলে ধরা না হয় তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম জানতেও পারবে না সেই হব মহীয়সী নারীদের নাম যাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র।
...............................................................................................................
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নারী সমাজের অবদান মুল্যায়ন কর(অনার্স পরিক্ষা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-২০১৯)
Evaluate the contribution of women in the Liberation war of Bangladesh.
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ প্রকৃত অর্থেই ছিল জনযুদ্ধ নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবাই সর্বাত্মক এই যুদ্ধে শামিল হয়েছিল সমানভাবে
অন্যদিকে, রণাঙ্গনে দাঁড়িয়েও বিপুল বিক্রমে লড়েছেন নারীরা তবু আফসোসের সঙ্গে বলতে হয়, মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবদানের সঠিক মূল্যায়ন আজও হয়নি ক্ষেত্রে কেবল আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নয়, বিশ্ব ইতিহাসের দিকে তাকালেও দেখা যাবে, যেকোনো অমানবিকতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক যুদ্ধ অথবা স্বাধীনতাযুদ্ধে নারীর অবদান কোনো অংশেই কম নয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করলে এটা এখন সহজেই অনুমেয়, ১৯৭১ সালে এবং পরবর্তী সময়ে প্রায় দুই দশকজুড়ে দেশে নারী মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় তেমনভাবে আলোচিত হয়নি যে কারণে একজন বীথিকা বিশ্বাস বা শিশির কণা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সৈন্যদের গানবোট গ্রেনেড মেরে উড়িয়ে দিলেও যুদ্ধ-পরবর্তীকালে তাঁরা যথাযোগ্য বীরের মহিমায় অভিসিক্ত হননি উপরন্তু তাঁদের ললাটে জোটে সামাজিক লাঞ্ছনা যুদ্ধ শেষে এই বীথিকা বিশ্বাস শিশির কণাকে তাঁদের পরিবার সমাজ গ্রহণ করেনি যুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশে এমন উদাহরণ অসংখ্য
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের দ্বারা নিপীড়িত হয়েছিলেন একাত্তরের জননী গ্রন্থের লেখক চট্টগ্রামের রমা চৌধুরী ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন একাত্তরে নির্যাতনের শিকার অনেক নারীর মতো নারীর জীবনেরও ট্র্যাজেডি হলো, যুদ্ধের পর স্বামীগৃহে তাঁর ঠাঁই মেলেনি যুদ্ধকালে যেসব নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, তাঁদের পুনর্বাসনের প্রয়োজন ছিল, স্বামীহারা বিধবাদের দরকার ছিল আশ্রয় এসবই তখন বড় করে দেখা হয়েছে পাশাপাশি ১৯৭১-এর নারী নির্যাতনকে বীরত্বের মহিমা দিয়ে ঢেকে দিতে চেয়েছে রাষ্ট্র ফলে নির্যাতিত নারীদেরবীরাঙ্গনাআখ্যা দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয়ভাবে
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পূর্ব প্রেক্ষাপটের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে, এই সংগ্রাম পরিণতি অর্জন করেছে ধাপে ধাপে, যেখানে নারীর বলিষ্ঠ ভূমিকা বিদ্যমান ১৯৬৯-এর গণ-আন্দোলন অভ্যুত্থানে নারীরা ছাত্রীসমাজ সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে ১৯৬৯-এর ১৯ জানুয়ারি আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর লাঠিপেটা করে সামরিক জান্তার সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী ২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহীদ হন আসাদুজ্জামান এরপর শিবপুরের গ্রামের বাড়ি থেকে আসাদের মা ছাত্রনেতাদের কাছে বাণী পাঠালেন, ‘আমার আসাদের মৃত্যু হয়নি আমার আসাদ বলত, “মা, আগামী দশ বছরের মধ্যে এই মাতৃভূমি নতুন জীবন পাবেআমার আসাদের এই স্বপ্ন তোমরা সার্থক করো’ (দৈনিক আজাদ, ২৬ জানুয়ারি ১৯৭০) আসাদের মায়ের এই বাণীর মধ্য দিয়ে তাঁর যে পরিচয় আমাদের কাছে উন্মোচিত হয়, তা অবশ্যই একজন মুক্তিযোদ্ধার
সেই সময় ছাত্রীরা সব মিছিল-আন্দোলনে সোচ্চার থেকেছেন সর্বজনশ্রদ্ধেয় কবি সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে নারীসমাজ রাজবন্দী মুক্তি আন্দোলনে, গণ-আন্দোলনে, মিছিলে প্রতিদিনই যোগ দিয়েছে ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারি এই মহীয়সীর নেতৃত্বে সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আড়াই হাজার নারী সমাবেশ করেন, মিছিল করে বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত যান ২৪ মার্চ ১৯৬৯- প্রকাশিত আজাদ-এর তথ্য অনুযায়ী, বোরকা পরা হাজার হাজার পর্দানশিন নারীও যোগ দেন সেই মিছিলে
একাত্তরের উত্তাল মার্চের তারিখে তৎকালীন রেসকোর্স, বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন ঘোষণা দিলেন, ‘...আর যদি একটি গুলি চলে... প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো’, সেই সময়েওঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলা কাজে উদ্ধুদ্ধ হয়েছিলেন নারীরা ফলে দেখা যাবে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, ফরিদপুর, খুলনা, ঈশ্বরদী, পাবনা, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ময়মনসিংহসহসব জেলায় নারীসমাজের প্রতিবাদী সভা মিছিল হয়েছে সময় তারা জেলায়, শহরে-শহরে, এলাকায়-এলাকায় সংগঠিত হয়ে কুচকাওয়াজ অস্ত্র চালনার ট্রেনিংও শুরু করে মার্চ বাড়িতে বাড়িতে কালো পতাকা উড়তে দেখা যায় এই কাজে নারীসমাজ ছাত্রসমাজ প্রধান ভূমিকা নিয়েছিল (জহিরুল ইসলাম, একাত্তরের গেরিলা, ঢাকা, প্রকাশক মিলন নাথ, ১৯৯৭, পৃষ্ঠা.২০)
পরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বহুমাত্রিকভাবে নারীরা সেই যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানসব ধর্মের নারীই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন কেবল বাঙালি নয়, সর্বাত্মকভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন আদিবাসী নারীরাও যুদ্ধের সময় যদিও বাংলাদেশ সরকারের নীতিতে নারীদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া, গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা এবং প্রশাসনিক কাজের নেতৃত্বে নারী সাংসদদের দায়িত্ব দেওয়া ইত্যাদির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, তারপরও ক্ষেত্রে নারীরা ছিলেন অনড় তাঁরা সম্মুখসমরে অংশ নেওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছিলেন কলকাতায় রাজনীতিবিদ মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের প্রতিনিধি সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পরিচালনায় গোবরা ক্যাম্পের ৩০০ তরুণীকে গোবরা বিএলএফক্যাম্পে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল এঁদের মধ্যে গীতা মজুমদার, গীতা কর, শিরিন বানু মিতিল, ডা. লাইলী পারভীন অস্ত্রচালনা শেখার পরও তাঁদের সম্মুখসমরে যেতে দেওয়া হয়নি নারীদের প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রশ্নে সেই সময় যুদ্ধকালীন সরকারের ভেতরেই দ্বিধা ছিল অন্যদিকে বিভিন্ন যুবশিবিরে যুদ্ধের প্রশিক্ষণের জন্য অস্ত্রসংকটে অপেক্ষায় ছিলেন বিপুলসংখ্যক তরুণ ছেলেরা যেখানে অস্ত্র পাচ্ছে না, যুদ্ধে যেতে পারছে না, প্রশিক্ষণ পাচ্ছে না, সেখানে মেয়েদের মুক্তিযুদ্ধ করার জন্য প্রশিক্ষণ অস্ত্র দেওয়ার গুরুত্ব বাংলাদেশ সরকার রাজনীতিবিদদের প্রচলিত ধ্যানধারণায় ছিল না নারীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সে সময় মোটেও ন্যায়সংগত হয়নি তারপরও আলমতাজ বেগম ছবি গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন বরিশালের করুণা বেগম ছিলেন অকুতোভয় মুক্তিসেনা পুরুষের পোশাকে যুদ্ধে পাকিস্তানিদের প্রতিরোধ করেছিলেন শিরিন বানু মিতিল, আলেয়া বেগম
এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের মায়েদের কথাও বলা দরকার শহীদ রুমীর মা জাহানা ইমাম বা শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগমের মতো সব মা মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন তাঁদের এই ত্যাগও ইতিহাসের অংশ মূলত, এভাবেই নারীরা বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে অদম্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তাঁরা ক্যাম্পে ক্যাম্পে কাজ করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ক্যাম্পে রান্নার কাজ করেছেন যাঁরা, তাঁরা অস্ত্রশিক্ষা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রহরী হিসেবেও কাজ করেছেন আবার শত্রুদের বিষয়ে, খানসেনা রাজাকারদের অবস্থান সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবরও দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের সময় বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের লুকিয়ে রাখা, অস্ত্র এগিয়ে দেওয়া অথবা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা চিকিৎসা করা, তাঁদের জন্য ওষুধ, খাবার কাপড় সংগ্রহ করারক্ত ঝরা একাত্তরে নারীদের এই সক্রিয় কর্মকাণ্ডই ছিল তাঁদের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তৎকালীন সভানেত্রী সুফিয়া কামাল পাকিস্তানি বাহিনীর নজরদারিতে যুদ্ধের নয় মাস ঢাকায় তাঁর বাড়িতেই ছিলেন ওই অবস্থায়ও তিনি নানা কৌশলে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন এসব তিনি সে সময় দিনলিপিতে লিখেছেন, যা বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে
স্বাধীনতার ২৯ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রত্যক্ষ অবদানের স্বীকৃতি পেতে শুরু করেন নারীরা এর ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ বিস্মৃতি অবহেলা শেষে ইতিহাস এখন বদলাতে শুরু করেছে নারী মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বীর প্রতীক খেতাব পেয়েছেন তিনজন১৯৭২ সালে ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম; এরপর তারামন বিবি ১৯৭৩ সালে ১৯৯৭ সালে পেয়েছেন কাঁকন বিবি তারামন বিবি কাঁকন বিবি ২০১৮ সালে প্রয়াত হয়েছেন এবং দুজনই অনেককাল ছিলেন বিস্মৃতির অন্ধকারে
বলার অপেক্ষা রাখে না, মুক্তিযুদ্ধকালে নারীর আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থান ছিল অত্যন্ত সনাতন পশ্চাৎপদ পুরুষেরা যখন সংগ্রামরত ছিল পাকিস্তানি সৈনিকদের পরাস্ত করে স্বদেশকে মুক্ত করার জন্য, নারীকে তখন দেশমুক্তির পাশাপাশি নিজের অস্তিত্ব, মর্যাদা সম্ভ্রম রক্ষার জন্য লড়াই করতে হয়েছে এখন নারীর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে বিভিন্ন বই বের হয়েছে সেখানে তাঁদের মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর অভিজ্ঞতার বিবরণের মধ্যে আমরা শুনতে পাই সাহসী প্রতিরোধের পদধ্বনি, যা থেকে এই সত্য আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে স্পষ্ট হয় যে নারীসমাজের সাহায্য ছাড়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং গেরিলা যুদ্ধ চালানো সম্ভব ছিল না
মালেকা বেগম: গবেষক, শিক্ষক, সোশিওলজি অ্যান্ড জেন্টার স্টাডিজ বিভাগের প্রধান, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি, ঢাকা

No comments

Powered by Blogger.